আফ্রিকান কালোকে নোয়াখাইল্লা কিভাবে বাংলা শিখালো!
জুলো সম্প্রদায়ের জন্ম নেওয়া ছেলেটা দক্ষিণ আফ্রিকা ফুমালাঙ্গা দারিদ্র গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা-মা তার জন্মের পর নাম দিয়েছিল সেমকেলো। দারিদ্রতার ভয়াবহতায় স্কুল জীবনে চাকরি জীবন শুরু করেন বাংলাদেশি গোসারি দোকানে। স্কুল জীবনে থাকতেই সেই শহরের পিয়ার আলী নামে একজন বাংলাদেশী সেমকেলো কে চাকরিতে রাখেন। দক্ষিণ আফ্রিকা বেশিরভাগ বাংলাদেশী দোকানদার কালোদের সাথে কথা বলতে হাসি ঠাট্টায় বাংলায় কথা বলতে পছন্দ করেন। দোকানে কাস্টমার আসলেই বাংলাতে তাদের জিজ্ঞেস করতে দেখা যায় কেমন আছেন। সেই ৮ বছর বয়স থেকে বাংলাদেশীদের সুপার মার্কেটে চাকরি জীবন শুরু করেন সেমকেলো। দীর্ঘ পাঁচ বছর চাকরি করে টুকটাক বাংলা বলতে পারতেন সেমকেলো। ক্লাস টেনে থাকা অবস্থায় গ্রামে বাংলাদেশীদের দোকান ছেড়ে শহরে উঠে আসেন সেমকেলো।
২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়া হোম অফিসে এই ছেলেটাকে দেখা যেত বাংলাদেশিদের এসাইলাম করার জন্য সহায়তা তাছাড়া ৫০ টাকার বিনিময় প্রিটোরিয়া হোমি অফিসে বাংলাদেশীদের সিকিউরিটি গেট পর করাতো। কয়েকদিন সেখানে কাজ করার পর চাকরি ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন সেমকেলো।
২০১৯ সালে সেমকেলো সাউথ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ মোস্তফা মামুন নামের একজন বাংলাদেশীর দোকানে কর্মজীবন শুরু করেন! নোয়াখালী জন্ম নেওয়া মোস্তফা মামুন সেমকেলোকে ভালোভেসে মহিন নাম দিয়েছিল। তাছাড়া আফ্রিকান এই ছেলেটাকে মোস্তফা মামুন নিজের নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষা শিখানো শুরু করেন। সেই সাথে ২০১৯ সালের শেষের দিকে মোস্তফা মামুন তার ফেসবুক পেজে লাইভ ভিডিও করেন মহীনকে নিয়ে। আর সেই লাইভ মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি করে দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশিদের মাঝে। তার মুখে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষা শুনে পুরো পৃথিবীর মানুষ অবাক চোখে তাকিয়ে রয়। কেউ কেউ তার মুখে বাংলা শুনে বিশ্বাস করতে চায় না এই ছেলেটা দক্ষিণ আফ্রিকা জুলি সম্প্রদায়ের কৃষ্ণাঙ্গ বংশে জনগণ করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা তার অসাধারণ ট্যালেন্ট রীতিমত বাংলাদেশিদের বোকা বানিয়ে ছাড়ে। তার মুখে বাংলা শুনে মোস্তফা মামুন এমটাই মনে করেছিল তিনি তার আঞ্চলিক ভাষা এত সাজিয়ে গুছিয়ে বলে না, ঠিক যতটা দক্ষিণ আফ্রিকার কালো মুখে শোভা পায়।
তার প্রথম ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় ইদানিং মোস্তফা মামুন তার ফেসবুক পেইজে মহিনকে নিয়ে বিভিন্ন টপিসে ভিডিও শেয়ার করেন! তার ভিডিওতে প্রকাশ পায় পৃথিবীতে বিদেশীরা বাংলা শিখলে ও এরকম টাটকা বাংলা তেমন কারো কেউ বাংলা বলতে পারবে না। মহিন একমাত্র ট্যালেন্ট যার মুখে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষা এতটাই দ্রুত শুনা যায়, যা বাংলাদেশীদের মধ্যে অনুপ্রেরণা ছড়ায়। বহু বাংলাদেশী কাছে এই মানুষটা তার মুখের কথা কিংবা বাংলাদেশী বাসায় তার মনোভাব পোষণ করা অসাধারণ রূপে প্রকাশ পায়। সেই সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশিদের মাঝে ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন মহিন। সেই সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা জনপ্রিয় ফেসবুক পেইজ Bengali in Africa এডমিন মোস্তফা মামুন মহিকে বাংলাদেশে নেওয়ার ব্যাপার সজাগ রয়েছেন। আমার মতে কার কাছে এই মানুষটাকে ভাললাগে কমেন্ট করে জানাতে পারেন আমাদের! সেই সাথে ভিডিওটি শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিবেন।
Comments
Post a Comment